সৌদি আরবে বাড়ছে ‘অস্থায়ী’ বিয়ে, ঝুঁকছেন প্রবাসীরাও

চুক্তি ভিত্তিক নামমাত্র বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে সৌদি আরবে। শর্তহীন এই বিয়ে সৌদি সমাজে ‘মিসইয়ার’ নামে পরিচিত। তবে এই বিয়ে নিয়ে চিন্তিত সৌদির ‘ধ’র্মীয়’ ব্যক্তিরা। তাঁদের অ’ভিযোগ ‘মিসইয়ার’-এর মাধ্যমে আদতে উচ্ছৃঙ্খলতাকেই বৈধতা দান করা হচ্ছে। খবর- হিন্দুস্তান টাইমস।

মু’সলিম ধ’র্ম অনুযায়ী বিয়ের আগে সহ’বাস অ’বৈধ। তবে এই মিসইয়ারের আড়ালে সৌদি ব্যক্তিরা ‘লিভ-ইন’ বা পর’কী’য়ায় মেতেছেন। এর জন্যে বিশেষ ‘ম্যাচ-মেকিং’ সাইটা বা গ্রুপও আছে সোশ্যাল মিডিয়াতে।

প্রাথমিক ভাবে সৌদি সুন্নিদের মধ্যে ‘মিসইয়ার’ প্রচলন বেশি ছিল। শর্ত অনুযায়ী স্ত্রী’র আবাস সংস্থান ও অর্থ ব্যবস্থার দায়িত্বে থাকবেন স্বামী। বিনিময়ে গৃহ রক্ষণাবেক্ষণ এবং তার ঘরে ঢোকার অনুমতি পাবেন স্বামী।

মিসইয়ার বিয়ের শর্তের মধ্যে আরও রয়েছে উভ’য়ের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে নগদ অর্থ। একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকে এর মেয়াদ।

তবে যেকোনো সময়ে উভ’য়পক্ষ মু’সলিম বিয়ের মূল রীতি অনুযায়ী বিয়ে করতে পারবেন। আবার যেকোনো সময় একে অন্যকে ছেড়ে যেতে পারবেন। লোকলজ্জার ভ’য়ে সাধারণত এ বিয়ের কথা গো’পন রাখা হয়।

২০১৪ সালে প্রথম আরব নিউজ এ বিয়ের বাস্তবতা নিয়ে প্রতিবেদন রচনা করেছিল। কয়েক দশক ধরে স্থানীয়ভাবে আইনসিদ্ধ এ বিয়ের প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়ায় সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক সৌদি এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে যে বহুবিবাহে আগ্রহীদের জন্যই মিসইয়ার ব্যবস্থা মানানসয়ী। এদিকে মহিলারাও এই ব্যবস্থার মাধ্যমে পুরুষতান্ত্রিক নানা জটিলতা থেকে দূরে থাকতে পারেন।

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই বিয়েগুলোর মেয়াদ ১৪ থেকে ৬০ দিন হয়। যারা বিয়ের পর স্ত্রী’য়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে রাখতে চান না, তারাই এ ধরনের বিয়েতে বেশি উৎসাহী।

বহুগামী নারী-পুরুষ দ্বিতীয় সংসারের ভা’র বহন করে বেড়ানোর চাপ এড়িয়ে এই ধরনের স’ম্পর্কের সুবিধা উপভোগ করে থাকেন। বিধবা, তালাকপ্রাপ্তা মহিলাদের মধ্যে এই বিয়ে বেশ জনপ্রিয় বলে জানা গেছে।

কার্যত লিভ-ইনের মতো এই স’ম্পর্ককে হালাল বলে দাবি করেন এক সৌদি কর্মক’র্তা। ৪০ বছর বয়সী সেই কর্মক’র্তা নিজে ‘মিসইয়ার’ বন্ধনে আবদ্ধ বলেও জানান।

রিয়াদের বাড়িতে তাঁর এক মিসইয়ার স্ত্রী’ রয়েছেন। তাছাড়া সাধারণ বিয়েও করেছেন তিনি। সেই স্ত্রী’য়ের তিন সন্তান রয়েছে। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, তাঁর এক বন্ধুর এরকম ১১ জন গো’পন স্ত্রী’ রয়েছে।

এদিকে সৌদিতে বসাবসরত এক প্রবাসী এই বিষয়ে বলেন, ‘এই বিয়ে খুবই সস্তা। কোনো পণ লাগে না। কোনও বিধি-নিষেধ নেই। মহামা’রী শুরু হওয়ার পর আমি আমা’র স্ত্রী’ ও ৫ বছর বয়সী ছে’লেকে কায়ারোতে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।

এরপরই আমি মিসইয়ারের সন্ধানে নামি।’ তিনি জানান ইনস্টাগ্রামের ম্যাচ’মেকার ‘খাতবা’র মাধ্যমে তিনি মিসইয়ারের সন্ধান করছেন। পছন্দ মতো পাত্র পেলে খাবতাকে ৫ হাজার রিয়েল দিতে হবে।